ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও এন্টামিবা যেসব রোগ সৃষ্টি করে তার প্রতিরোধ ও প্রতিকার করতে হলে সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্য রক্ষার নিয়মগুলো যত্ন সহকারে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, দুর্বল স্বাস্থ্যের ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বহন করে। তাই সকলের উচিত সুষম খাদ্য প্রয়োজন মতো নিয়মিত গ্রহণ করা।
কাজ: তোমার শ্রেণির যাদের নখ বড়ো, যারা আজ দাঁত ব্রাশ করেনি তাদের তালিকা বানাও এবং এ ব্যাপারে তাদের সচেতন কর। |
শুধু মাংস আর মাছ খেলেই সুষম খাদ্যের ঘাটতি পূরণ হয় না। একইসাথে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খেলে তবেই সুষম খাদ্যের ঘাটতি পূরণ হয়। ভিটামিন ও খনিজ লবণ সুস্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আসে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাত ও মুখ পরিষ্কার করা, নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, হাতের নখ কাটা ও সাবান ব্যবহার করে গোসল করা। রাস্তাঘাটে যত্রতত্র থুতু বা কফ না ফেলা। পথ চলতে বিশেষ করে ধুলাবালি উড়ছে এমন স্থানে চলাচলের সময় অবশ্যই মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে। হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই মুখে ও নাকে রুমাল চাপা দিতে হবে। রুমালে সর্দি মুছলে অবশ্যই বাসায় ফিরে তা ধুয়ে ফেলতে হবে। তোমরা সম্ভব হলে নাক ঝাড়ার জন্য টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে পার। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য কোনো কিছু ব্যবহার বা স্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। খাবার পানি নিরাপদ হওয়া খুবই জরুরি। কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে। পান করা, গোসল ও কাপড় কাচা, বাসন ধোওয়া ইত্যাদির জন্য নিরাপদ পানি ব্যবহার করা উচিত। আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলের পানি নিরাপদ। পুকুর ও নদীর পরিষ্কার পানিও ব্যবহারের পূর্বে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। মানুষ ও পশুপাখি আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসা করাতে হবে। তবে ভাইরাস, যেমন বার্ডফ্লুতে আক্রান্ত হলে পাখি মেরে মাটিতে পুঁতে রাখতে হয়। ম্যাডকাউ ও অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত গরু-মহিষও মেরে ফেলা উচিত কারণ এর চিকিৎসা চলাকালীন অন্যান্য পশু আক্রান্ত হতে পারে।
কাজ: তোমাদের এলাকায় ঘুরে দেখ কোন কোন বাড়িতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। না থাকলে প্রয়োজনীয় করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করে শ্রেণিতে উপস্থপনা কর। |
এলাকার সবাইকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জীবনযাপনে উৎসাহিত করতে হবে। কীভাবে এসব জীবাণু মানবদেহে ঢুকে পড়ে এবং কী করলে এদের প্রতিরোধ করা যাবে সে সম্পর্কে নিজে ভালোভাবে জানতে হবে। বিদ্যালয়ে, মসজিদে, মন্দিরে, খেলার মাঠে, হাটে, বাজারে যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানেই এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করা যায়। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করাটাই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিরোধ। রোগাক্রান্ত হলে অবশ্যই রোগীকে একজন ভালো চিকিৎসকের নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ঔষধ সেবন করতে হবে। হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় রোগ নিরাময়ের বদলে রোগ জটিল সতরে পৌঁছে যায়। এ ব্যাপারে আমাদের সকলের অনেক দায়িত্ব রয়েছে।
এ অধ্যায়ে আমরা যা শিখলাম
common.read_more